আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্পেন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পক্ষপাতী দলগুলোর একটি জোট কাতালুনিয়ার প্রাদেশিক সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। একইসঙ্গে আবার সর্বাধিক আসন সংগ্রহ করেছে মাদ্রিদপন্থি নাগরিক দল৷
ক্ষমতাচ্যুত প্রাদেশিক প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুজদেমনের ‘কাতালুনিয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ’ দল বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে ৩৪টি আসন লাভ করে। অপর দু’টি স্বাধীনতাপন্থী দল একত্রে ৩৬টি আসন সংগ্রহ করেছে। কাজেই ১৩৫ আসনবিশিষ্ট প্রাদেশিক সংসদে স্বাধীনতাপন্থীদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকছে। এর ফলে পুজদেমনই দৃশ্যত ক্ষমতায় ফিরতে চলেছেন।
২০১৫ সালের শেষ প্রাদেশিক নির্বাচনে পুজদেমনের জোট আরেকটু ভালো ফল করেছিল। সেবার স্বাধীনতাপন্থী দলগুলো ৭২টি আসন জয় করে, যা এবারের চেয়ে দু’টি আসন বেশি। এবারের নির্বাচনে স্বাধীনতাপন্থী দলগুলো প্রদত্ত ভোটের মাত্র ৪৮ শতাংশ লাভ করেছে। মাদ্রিদপন্থি নাগরিক দল তাদের ৩৭টি আসনের অধিকাংশ সরাসরি ভোটে জয় করে; কিন্তু নাগরিক দলের পক্ষে স্বাধীনতাপন্থীদের মতো জোরালো জোট গঠন করা সম্ভব নয়।
ব্রাসেলসে তাঁর স্বেচ্ছানির্বাসন থেকে পুজদেমন এই জয়কে ‘‘কাটালান প্রজাতন্ত্রের” পক্ষে একটি জয় এবং স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাখয়ের গালে একটি ‘‘চপেটাঘাত” বলে অভিহিত করেছেন।
তবে নাগরিক দলের নেতা ইনেস আরিমাদাস বলেন, ভোটের ফল প্রমাণ করে যে, ‘‘কাতালানদের একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ নিজেদের কাটালান, স্প্যানিশ ও ইউরোপীয়” বলে মনে করে। তিনি ”বিচ্ছিন্নতাবাদী” দলগুলোর বিরুদ্ধে ”সংগ্রাম” চালিয়ে যাবার সংকল্প ঘোষণা করেন।
কাটালান জাতীয় সম্মেলনের ভাইস প্রেসিডেন্ট আগুস্তি আলকোবেরো বার্সেলোনায় এক সমাবেশে বলেন, ‘‘স্বাধীনতাপন্থি দলগুলি নির্বাচনে জয়লাভ করেছে।” তিনি কারারুদ্ধ স্বাধীনতাপন্থী রাজনীতিকদের মুক্তি ও মাদ্রিদ কর্তৃক বরখাস্তকৃত ‘‘সরকারের পুনঃপ্রতিষ্ঠা” দাবি করেন।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতাপন্থীদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়াটা স্পেনের প্রধানমন্ত্রী রাখয়ের সরকারের পক্ষে একটি লক্ষণীয় পরাজয়, কেননা রাখয় এই নির্বাচনের মাধ্যমে কাতালুনিয়ায় বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতার অবসান ঘটানোর আশা করেছিলেন। কিন্তু এই ভোটের ফল জানান দিচ্ছে, কাতালুনিয়ায় রাজনৈতিক অচলাবস্থা অবসানের কোনো আশা নেই। কেননা একটি স্বাধীনতাপন্থী সরকারই প্রাদেশিক প্রশাসনের দায়িত্ব নিতে চলেছে।
ব্যাপক ভোট পড়েছে
উভয় পক্ষের সমর্থকরা যে এ নির্বাচনকে কতোটা আন্তরিকভাবে নিয়েছেন, তার প্রমাণ ভোটের টার্নআউট। বৃহস্পতিবার সকালে ভোটকেন্দ্র খোলার আগেই অপেক্ষমান মানুষের লাইন পড়ে যায়। কেননা অনেকে কাজে যাবার আগে ভোটপর্ব সমাপ্ত করতে চেয়েছিলেন। বিকেলে ভোটকেন্দ্র বন্ধ হওয়ার আগের কয়েক ঘণ্টায়ও কাটালানরা কাজ থেকে ফেরার পথে ভিড় করে ভোট দিতে যান। প্রদেশিক সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৮২ শতাংশের সামান্য কিছু কম বা প্রায় ৩৭ লাখ রেজিস্ট্রিকৃত ভোটার ভোট দিয়েছেন, যা কিনা ২০১৫ সালের টার্নআউটের চেয়ে সাত শতাংশ বেশি। সূত্র : ডয়চে ভেলে